অতঃপর লগ-আউট
লিখেছেন লিখেছেন এম এইচ রাসেল ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৪:৫৫:৪৩ বিকাল
-“তুমি বলতে চাও টা কি?”
-“কোলন স্টার দেখে বুঝনা???”
-“না বুঝিনা!!! সরাসরি বল কি বলতে চাও!”
-আমি বলতে পারবনা!!! এসব মেয়েদের বলার কথা না।” -“আজব তো!!!! কি মেয়েরা বলেনা!!!!”
-“অনিম, আমি জানি তুমি সব কিছুই বুঝতে পারছ!!! তারপরেও
কেন এমন করছ??”
ল্যাপটপের সামনে বসে অনিম পাগলের মত হাসা শুরু করল! ও
কিছু চিন্তা ভাবনা না করেই রিপ্লাই গুলো দিয়ে যাচ্ছে ...
“আমি কি করছি??” তিন্নি এবার অফলাইন হয়ে গেল!!! আর অনিম ল্যাপটপের
দিকে হা করে চেয়ে চেয়ে ভাবল, “এমন টা করা ঠিক
হচ্ছেনা!!! গাধা টা আস্তে আস্তে লগ আউট
করে দিয়ে ল্যাপটপের দিকে বেকুবের মতন কিছু তাকায়
থাকল!!! তারপর বলল, “আস্ত একটা পাগলী মেয়ে!!”
তিন্নি বালিশের উপর মুখ গুঁজে শুয়ে আছে। লগ আউট করেছে ১.৫০ ঘন্টা হয়ে গেল এখনও ঘুমের নাম নিশানা নাই!! বিন্দু বিন্দু
জল জমা হয়েছে চোখের কোনে! মনে একটা উদ্ভট গান বাজছে।
ইংলিশ গান। তিন্নি কানে আঙ্গুল দিয়ে পাশ ফিরে শোয়ার
চেষ্টা করে দেখল কানে তো হেডফোন নাই, গান কই বাজে? গান
টা আসলে ওর মস্তিষ্কের সাথে সেলাই
করে দেয়া হয়েছে এটা বুঝতে ওর আর সময় লাগল না!! মাথায় খালি বারবার এই আজব কল্পনা টা ঘুরে, অনিম গীটার হাতে ওর
সামনে বসে ওয়েস্টলাইফের ‘টানেল অব লাভ’ গান টা গাইছে!!
তিন্নি বিছানা থেকে নেমে বারান্দায় এসে দোলনায় বসল!
আকাশে বিশাল একটা চাঁদ!! চারিদিক কেমন নিস্তব্ধ!!
তিন্নি ভাবল এই নীরবতায় মনে হয় সেই বিচ্ছুর
কল্পনা টা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে! তবে ওর ধারণা পুরাই ভুল ছিল! ঝিরিঝিরি বাতাস আর পূর্ণিমার আলো মিলে আসলে ওর
কল্পনার জন্য পারফেক্ট একটা স্টেজ তৈরী করে ফেলছিল!
তিন্নি এইবার রাগের মাথায় বিরবির করে বলল, “বিচ্ছু
কোথাকার!! আরেকবার যদি গীটার
নিয়ে সামনে এসে টুংটাং করিস তাইলে মাথার মধ্যে আছাড়
মেরে গীটার টা ভাঙ্গব!” তিন্নির বান্ধবীরা বুঝতে বাকি রাখে নাই যে খুব
জলদি তাদের বান্ধবীর জন্য হেমায়তপুরে একটা সীট
বুকিং দিতে হবে! স্কুলে দশটা কথার মধ্যে নয় টা কথাই
থাকে তার অনিম কে নিয়ে! “জানিস কাল অনিম কি বলছে?? এই
হইছে সেই হইছে!!” এক গল্পই যে মুখ দিয়ে কতবার বের
করে মেয়ে, অন্য রা শুধু এইটার ই হিসাব রাখায় ব্যস্ত! -“অনিম তোকে কখনও সিরিয়াসলি নেয় নি! ওর কাছে তুই
একটা পিচ্চি! তুই কেন এরকম করছিস বল তো তিন্নি? এরকম
অনিম দশটা আসবে দশটা যাবে, তুই দেখি পুরা রবীন্দ্রনাথের
গল্পের নায়িকার মতন ভাব ধরে আছিস!!”
-“অনিমের মতন দশটা কেন ওর একটা জোড়া এনে দেখা তো!
অনিমেরও যেমন জোড়া মিলবেনা তেমনি অনিমের জন্য আমার ফিলিংস এরও আরেকটা জোড়া মিলবেনা!!”
-“উরিব্বাস!! আচ্ছা মাফ কর, তোর কাছে জুলিয়েট ফেইল!!
তিন্নি যে একটা কিরকম অস্বস্তির মধ্যে দিয়ে দিন
কাটাচ্ছে তা ওর বান্ধবী বা অন্যদের পক্ষে বোঝা মুশকিল!!
বেচারি নিজের ভিতরে নিজের কথা রাখতে পারছেনা আবার
বলতেও পারছেনা!! -“এটা মাইনাস ফোর হবে তো!!”
-“জ্বি স্যার?”
-“এখানে একটা মাইনাস বসবে! এরকম ভুল
তো তুমি কখনো করনা তিন্নি!! এটা হল কেন?”
-“সরি স্যার! নোটিস করিনাই!!” তিন্নি নিজেও অবাক
হয়ে অংকটার দিকে তাকায় ছিল, এরকম ভুল আসলেই তার করার কথা না! ফ্রেন্ডস দের কাছে সে লেডি রামানুজন
নামে পরিচিত! আর আজ এরকম স্টুপিড একটা মিসটেক??
ভাবা যায়!! তিন্নি কিন্তু তার অংক ভুল হওয়া নিয়ে খুব
বেশি আপসেট ছিল না! স্যারের পেকপেকানি মারাত্মক রকমের
অসহ্য লাগছিল ওর!!! “বেটা কখন যাবে???” নিজের মনে অন্তত
পক্ষে ৫০ বার কথাটা রিপিট করে ফেলেছে বেচারি!!! -“আজ তাহলে এ পর্যন্তই থাক!!”
-“ওকে স্যার!!!!” মেয়ে স্যার কে ওঠার সুযোগ পর্যন্ত দিল না!
আগে আগে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে খুব ভদ্র ভদ্র
চেহারা বানিয়ে দাঁড়ায় থাকল!! এমন বেয়াদবি আচরণ
দেখে স্যার ও সেরকম একটা এক্সপ্রেশনে ওর দিকে তাকায়
তাকায় জুতা পড়লেন! দরজা টা ধরাম করে বন্ধ করে দিয়ে, কোনরকমে ছিটকিনি টা টেনে, মেয়ে ল্যাপটপের ব্যাগ
নিয়ে বসে পড়ল বিছানায়!!
আশার গুড়ে বালি! অনিম হাসান ইজ নট অনলাইন! লাস্ট মেসেজ
“আমি কি করছি?” ফ্রাইডে টুয়েলভ থার্টি এ এম!
তিন্নির মুখের হাসিটা চট করে মিলায় গেল! অনিম
ছেলেটা আসলে কিছু বুঝার চেষ্টাই করছেনা!! তিন্নি কাঁপা কাঁপা হাতে টাইপ করল, তুমি সব বুঝেও না বুঝার
ভান করছ! তুমি জান আমি তোমার জন্য ফল করছি তারপরেও ড্যাম
কেয়ার টাইপের ভাব দেখাচ্ছ! তুমি জান আমি সারাদিন
তোমাকে নিয়ে ভাবি! আমার ফ্রেন্ডস দের কাছে আমি তোমার
নামে এলার্জি ধরায় দিছি! ফিজিক্স ক্লাসে আজ স্যার মাথায়
চক ছুড়ে মারছে, বাসার স্যারের কাছে আমি প্লাস মাইনাসের মতন স্টুপিড ভুল করছি, আমার ফেভারিট ব্যান্ডের গান
আমি সহ্য করতে পারিনা কারন যতবার ওদের গান
শুনি একটা বাজে খেয়াল মাথায় আসে! আমি নিকি ব্রায়ান
কে দেখি না, আমি দেখি অনিম হাসান গীটার নিয়ে আমার
সামনে বসে বলছে “আই এম রেডি টু বি অল ইউ আর ড্রিমিং অব!”
প্রত্যেক বার আমি লগ ইন করি তোমাকে অনলাইন দেখব বলে!! আর তুমি আমার অবস্থা দেখে মুচকি মুচকি হাস তাই না? খুব
মজা লাগে তোমার??? তুমি এত্ত খারাপ কেন???
এক টানে টাইপ করে তিন্নি বারবার মেসেজ টা পড়ল... তারপর
সবগুলো কথা ক্লিয়ার করে দিয়ে টাইপ করল “তুমি কিছুই
করনাই! সরি!” সেন্ড!!
এত বড় ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের দুনিয়া!! তবে তিন্নির ভাব দেখলে মনে হয় আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নাই!
ঘুরে ফিরে অনিম হাসানের প্রোফাইলেই ঘুরাঘুরি!! অনিম
হাসানের প্রোফাইল পিকচারস, কভার ফটোস, স্ট্যাটাস
আপডেটস, ওয়াল পোস্টস... ভাব দেখলে মনে হয় প্রোফাইল
টা যেন ওর ফাইনাল এক্সামের সিলেবাসে আছে!
-“হুম!” অনিম হাসানের পাশে সবুজ বাতি জ্বলতে দেখা যাচ্ছে!
সে রিপ্লাই দিছে হুম! তিন্নির রাগে পিত্তি জ্বলে যাবার
মতন অবস্থা!! সে এই হুম দেখার জন্য এতক্ষণ ধরে বসে আছে???
আজব!!!
-“হুম কি??? ঘাড়ে করে পালকি নিয়ে যাচ্ছো? হুম হুম না হুম হুম
না করে???” -“কার পালকি??”
-“তোমার বৌ এর পালকি!!”
-“আমার বৌ এর পালকি আমি নিয়ে যাব কেন? আশ্চর্য!!
আমি তো ঘোড়ায় থাকব!”
-“ছি তুমি সেই পুরানা দিনের স্টাইলে বিয়া করবা??”
-“নাহ বিয়া নিয়ে এখনও কিছু ভাবিনাই” -“আর রিলেশন?”
-“আহেম!! জানিনাহ!!”
তিন্নির এবার মনে হল অনিম আসলেই ওর ব্যাপারে সিরিয়াস
না! ও জানে এখন ওর লগ আউট করা উচিৎ তবে লগ আউট
করতে ইচ্ছা করছেনা! রাজকুমার কে চ্যাটলিস্টে রেখে কে ই
বা লগ আউট করতে পারে!!! ও টাইপ করল “অনিম!” -“বল!”
-“তুমি কখনও কাউকে ভালবেসেছ?
-“ হি হি এইডা কোন ধরনের কথা? নাহ বাসিনাই মনে হয়!!”
-“ভালবাসার ইচ্ছা আছে?”
-“সবার ই তো এরকম ইচ্ছা থাকে! আছে আর কি!”
-“আমাকে ভালবাসবে?” আল্লাহর নাম নিয়ে তিন্নি কথা টা সেন্ড করে দিল!! অনিম
কিছু রিপ্লাই দেয় না! তিন্নির হার্টবিট ড্রামস এ
রূপান্তরিত হয়ে খুব স্পিডে ঢিপঢিপ করতে লাগল! দুই তিন
মিনিট পর অনিম লিখল “আম্মু খাইতে ডাকছে, এখন
উঠি পরে কথা বলব। বাই! কোলন ব্র্যাকেট ক্লোজ!”
তিন্নির চোখ পানিতে ভরে উঠছে! কিছু দেখতে পাচ্ছেনা! চোখ মুছে মেসেজ টা আরেকটু ভাল
করে দেখতে গিয়ে দেখে “আমাকে ভালবাসবে?”----
সেন্ডিং ফেইলড!!
তিন্নির মুষ্টিবদ্ধ হাতের দ্বারা ঢাস
করে একটা বাড়ি বসানো হল ল্যাপটপ স্ক্রিনে!! এরপর লগ
আউট... অনিমের বেশ কয়েকটা পিকচার তিন্নির মোবাইলে সেভ
করা আছে। যখন তখন সেগুলো ওপেন করে মুগ্ধ চোখে তাকায়
থাকে তিন্নি! ছেলেটা যে মারাত্মক সুন্দর এমন কিছু না!
অতি সাধারন রকমের চেহারা! তবে পৃথার
পাশে বসে তিন্নি এমন ভাবে তার
বর্ণনা দিবে যে ছেলে তো নয় যেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও ! পৃথা বলে, “ইঁদুরের মতন কুটি কুটি চোখ তার আবার কত্ত
প্রশংসা!! এইডা কিছু হইল??”
-“এভাবে বলিস না পৃথা! তার চশমার পিছনে থাকা ঐ ভরসার
উপযুক্ত চোখ দুইটাই তো তার সব থেকে বড় আকর্ষন!!”
-“ভরসার উপযুক্ত!!!” তিন্নি তোর নিজেরই চশমা লাগবে রে!!
ভাল করে চেয়ে দেখ তারে দেখে তো মনে হয় নাম্বার ওয়ান ফ্লার্টবাজ!!”
-“পৃথা মাইর খাবি কিন্তু বলে দিলাম!! একদম ভাল হচ্ছেনা!!”
-“আর আপনি যা করতেছেন সেটা খুব ভাল হচ্ছে! তিন্নি প্লিজ
এতটা ইমোশনাল হয়ে পড়িস না!! যাকে চিনিস না জানিস
না তার জন্য এত পাগল হয়ে পরে প্রবলেমে পড়বি রে!!”
-“প্রবলেম ফবলেমের তোয়াক্কা করিনা আমি!!! এরকম ইমোশন লাইফে কারও জন্য কখনও আসেনি আমার!!! এর জন্য যখন আসছে এ
যখন আমার স্বপ্নের রাজকুমার হইছে তখন একেই আমার লাইফ
পার্টনার বানায় ছাড়ব!!”
-“সে যদি তোর লাইফ পার্টনার না হইতে চায়???”
-“হবে না মানে? হইতেই হবে!! না হইলে কিডন্যাপ
করে বানায় ছাড়ব!!!” -হাই!!
-হাই... কি খবর??
-খবর নাই কিছু!! মুড অফ!
-কেন তিন্নি? কি হইছে?
-তুমি অনলাইন আস না কেন? চারদিন হয়ে গেছে তোমার
সাথে কোন কথাবার্তা নাই!!! -এইজন্য মুড অফ??
-হুম এইজন্যই মুড অফ!!
-আমি চ্যাটে আসিনা বলে মুড অফ?
-“হুম!! এতবার জিজ্ঞাসা করার কি আছে???”
-“না কিছু নাই...
-“না না থাকবেনা কেন? আছে তো!! ব্যাং আছে! ব্যাঙের বাচ্চা আছে! ব্যাঙের সুপ বানায়ে খাও!!
-হাহাহা... তুমি বানায়ে দাও!!
-অনিম, আমার মেজাজ কিন্তু চরম ভাবে খারাপ।
গালি টালি দিয়ে দিব কিন্ত!!
-দাও না একটা গালি, কতদিন গালি খাই না!!!
-তোমার কি মনে হচ্ছে আমি ফাইজলামি করছি??? -আচ্ছা তোমার মেজাজ খারাপ??
-হুম...
-তো আমি কি করব??? কোলন পি
তিন্নির মাথায় আগুন জ্বলে উঠল, ছেলেটা ওর ইমোশন
নিয়ে খেলা করছে বুঝতে ওর টাইম লাগল না!!
-তুমি আমার ব্যাপারে কখনই সিরিয়াস না তাই না??? -মানে কি??
-আই থিঙ্ক আই এম ইন লাভ উইথ ইউ, অনিম!! একটা মুহুর্তও
চিন্তা না করে তিন্নি কথাটা টাইপ করে সেন্ড করে দিল!
অনিম রিপ্লাই দেয় না মেসেজ সিন... টু মিনিটস এগো, ...
নো রিপ্লাই সিন ফাইভ মিনিটস এগো... নো রিপ্লাই সিন টেন
মিনিটস এগো... মেসেজ সিন ইয়েস্টার ডে টেন থার্টি পি এম...
তিন্নি আজ স্কুলে যায়নি, টিউটর কে ফোন করে বলছে শরীর
খারাপ। সারাদিন বিছানায় শুয়ে আছে! যখনই সুযোগ পায় ফুঁপায়
ফুঁপায় কাঁদে!!! গীটার হাতের কল্পনা টা এখনও তাড়া করছে!!!
ঐ জিনিষ টা যতবার ই মাথায় আসছে মেয়ে হাউমাউ
করে কেঁদে দিচ্ছে। মোবাইল দিয়ে একটু পর পর ফেসবুকে ঢোকা হচ্ছে! অনিম হাসান শেয়ারড এ ফটো, অনিম
হাসান লাইকস এ স্ট্যাটাস এ আপডেটস গুলো হোম
পেজে আসছে তবে ইনবক্সে অনিম হাসানের রিপ্লাই আসছেনা!!
যতবার ঢুকছে ততবারই তিন্নির চোখ ভিজে আসছে!!
এভাবে কাঁদতে কাঁদতেই তিন্নি চোখ বুজে ঘুমের দেশে চলে গেল
সন্ধ্যার দিকে ঘুম ভেঙ্গেই আবার ফেসবুক, স্টিল নো রিপ্লাই ফ্রম অনিম হাসান!!
-“অনিম কিছু তো বল!!” তিন্নি মেসেজ টা লিখে সেন্ড
করে দিল!! তখনো তার গাল বেয়ে জল পড়ছে!
-আমার কিছু বলার নাই তিন্নি! তুমি কি চাও ঠিক করে বল তো!
-ঠিক করে বলার কি আছে?? আমি যা ফিল
করি তোমাকে আমি তাই বলছি! -তুমি চাও আমি তোমার সাথে রিলেশনে যাব?
-আমাকে আর কত কি বলতে হবে অনিম? ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টও
আমি সেন্ড করছি, ফার্স্ট চ্যাটে নক ও আমি করছি, আই লাভ ইউ
ও আমিই বললাম আচ্ছা যাও এবারও আমি বলছি যে আমি তোমার
সাথে রিলেশনে যেতে চাই!
-সরি গার্ল! আই ডোন্ট বিলিভ ইন ফেসবুক রিলেশনশিপ!!! ফেসবুকের ভেতরে থেকে রিলেশন করা যায় বলে আমি বিশ্বাস
করি না!
-আমি কি সারাজনম ফেসবুকের ভেতরে থেকেই প্রেম করব
অনিম? আমি তো তোমাকে সারা জীবনের জন্য চাইছি!
তাহলে এসবের কথা আসছে কেন?
-প্রথম প্রথম এসব সবাই বলে!! তিন্নি তুমি এসব বুঝার ব্যাপারে অনেক ছোট!! এভাবে ভালবাসা হয় না! নিজেকে ভাল
করে জিজ্ঞাসা করে দেখ তো তুমি আমাকে সত্যিই ভালবাস
কি না? তুমি কি আমাকে সেভাবে চেন?? আজ যদি দেখ আমার
একাউন্ট টা ফেইক তাহলে??
-অনিম ইমোশন চলে আসলে মানুষ রাইট রং হিসাব
করে চলতে পারেনা! আমি জানি আমি যা করছি তা স্বাভাবিক মস্তিষ্কের মানুষ করতে পারেনা! তবে আমি এখন স্বাভাবিক
না! আমি প্রেমের সমুদ্রে সাঁতার কাটছি! তুমি আমার জায়গায়
থাকলে এসব চিন্তা করতে পারতেনা!
-আমার তোমার জায়গায় থাকার প্রশ্নও উঠেনা!
আমি জীবনে ফেসবুকে কারও জন্য এভাবে পাগল হবনা! তুমি হয়
খুব ছোট তাই বুঝতে পারছনা আর নাইলে বুঝেও বুঝার চেষ্টা করছনা!
-তোমার কাউকে ভাল লাগে তাইনা অনিম? না হলে আমার
ইমোশন কে এভাবে হেলাফেলা করতে পারতেনা!!
-সেটা দিয়ে তোমার কিছু হবেনা! আমার কেউ থাকলেও
আমি তোমাকে হ্যাঁ করব না, না থাকলেও তোমাকে হ্যাঁ করব না!
আমি তোমার মতন পারসোনালিটি ছাড়া মানুষদের অনেক হেইট করি! আমার থেকে যত টা সম্ভর দূরে থাকবা!! নো ফারদার
কোয়েশ্চনস প্লিজ!!!!
তিন্নি অঝোরে কেঁদেই যাচ্ছে! ঠোঁট কামড়ে চোখ বন্ধ
করে দাঁড়ায়ে আছে! হাত পা অসম্ভব ভাবে কাঁপাকাঁপি শুরু
করছে!!! অনেক ভেবে টাইপ করল,
-বাই অনিম, টেক কেয়ার! বাট আই সিরিয়াসলি লাভড ইউ!!!! তুমি বুঝলে না!!!! মেসেজ সিন টু ইয়ারস এগো এইট টুয়েন্টি ওয়ান পি এম!! মেসেজ
টা দেখে তিন্নি লগ আউট করল! রাস্তার
পাশে ফুচকা পার্টি চলছে ফ্রেন্ডস দের সাথে। সবাই খুব মত্ত
সেখানে!!
-তিন্নি তিন্নি!!! রাহি ভাইয়া কিন্তু খুব ভাল!! তুই
হ্যাঁ করে দে না প্লিজ!! দেখ সে ঢাকা ভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টে পড়ে প্লাস তার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড ও এত
টা ভাল!! এত জোস করে কথা বলে ভাইয়া!! দেখতেও
তো হ্যান্ডসাম হিরো!!! এরকম দুলাভাই
হাতছাড়া করা যায়না তুই হ্যাঁ করে দে!!! প্লিজ!!!
অন্তরা পৃথার কথার মাঝে বাঁধা দিয়ে বলতে লাগল, আর সব
থেকে বড় ব্যাপার সে তোকে সিরিয়াসলি অনেক ভালবাসে রে!! তুই চ্যাটে রিপ্লাই না দিলে আমাদের বলে তোর কি হইছে?
একটা আপসেট স্ট্যাটাস দিলে আমাকে জিজ্ঞাসা করে তুই ঠিক
আছিস কি না! লাস্ট টাইম টার্ম এক্সামে কেমিস্ট্রি তে এ
মাইনাস পেয়ে যে কান্নাকাটি করছিলি বেচারা খুব আপসেট
হয়ে পড়ছিল তখন। তুই ও একাউন্ট ডিএকটিভেট
করে রাখছিলি আর ভাইয়া মিনিটে মিনিটে তোর খোঁজ নিছিল আমাদের থেকে!! এরকম মানুষ সহজে পাওয়া যায়না!
এভাবে কষ্ট দিস না রে বেচারা কে! হ্যাঁ করে দে!!
-“সরি গার্লস... আই ডোন্ট বিলিভ ইন ফেসবুক রিলেশনশিপ।
কষ্টের সিঁড়িগুলো এক পা এক পা করে পার করে আসছি বান্ধবী!
এত সহজে আবার নিচে পড়ে যেতে চাইনা রে!!! এত শক্তি আমার
প্রাণে নাই!!”
বিষয়: বিবিধ
১৭৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন